পার্থে সিরিজের প্রথম টেস্টে ভারতের হয়ে টস করতে নেমেছিলেন যশপ্রীত বুমরা। আজ সিডনিতে সিরিজের পঞ্চম ও শেষ টেস্টেও প্যাট কামিন্সের সঙ্গে টসে বুমরাই। পার্থক্য হচ্ছে, পার্থে টসের দিন ভারতের নিয়মিত অধিনায়ক রোহিত শর্মা অস্ট্রেলিয়াতেই ছিলেন না। পারিবারিক কারণে ভারত ছেড়েছিলেন দেরিতে। আর আজ বুমরা টস করতে নামার সময় ড্রেসিংরুমেই ছিলেন রোহিত।
না, চোটের কারণে মাঠের বাইরে নয়। সিডনিতে টসের পর মাইক্রোফোনের সামনে বুমরাই জানালেন, এই টেস্ট থেকে বিশ্রাম নিয়েছেন রোহিত। বিশ্রামের কথা বলতে গিয়ে বুমরা যোগ করেছেন, ‘আমাদের অধিনায়ক তাঁর নেতৃত্ব (গুণ) দেখিয়েছে।’এখানে নেতৃত্ব গুণ বলতে দলের স্বার্থে নিজেকে বিসর্জন দেওয়া। টানা ফর্মের বাইরে থাকা রোহিত সিরিজের শেষ টেস্টে নিজে না খেলিয়ে জায়গা করে দিয়েছেন শুবমান গিলের জন্য। একজন অধিনায়কই যেখানে টিম ম্যানেজমেন্টের অন্যদের সঙ্গে মিলে একাদশের বাকি ১০ জনের নাম চূাড়ন্ত করেন, সেখানে তাঁর নিজেরই ফর্মের কারণে সরে যাওয়া বিরল ঘটনা। এতটা বিরল যে, টেস্ট ক্রিকেটে এমন ঘটনা এর আগে ঘটেছেই মাত্র একবার।টেস্ট ইতিহাসে এর আগে অধিনায়কের ফর্মের কারণে নিজেকে একাদশ থেকে সরিয়ে নেওয়ার ঘটনাটি কাকতালীয়ভাবে সিডনিতেই ঘটেছিল। ১৯৭৪ সালে অ্যাশেজের চতুর্থ টেস্টে নিজেকে বাদ দিয়েছিলেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক মাইন ডেনেস। সেবারের সিরিজে ব্যাটে রান পাচ্ছিলেন না তিনি। ৬ ইনিংসে সাকল্যে রান ছিল ৬৫ (৬, ২৬, ২, ২০, ৮, ২)।
সিডনিতে নিজেকে বাদ দিলেও অ্যাডিলেডে পরের টেস্টেই একাদশে ফিরেছিলেন ডেনেস। সেটাও অবশ্য প্রয়োজনেই, কারণ সিডনিতে তাঁর বদলি হিসেবে খেলা জন এডরিচ চোটে পড়ায় পরের টেস্ট থেকে ছিটকে গিয়েছিলেন। মজার বিষয় হচ্ছে, দলে ফেরার এক টেস্ট পরই রানে ফিরেছিলেন ডেনেস। সে বার অ্যাশেজ ছিল ৬ টেস্টের। মেলবোর্নে হওয়া শেষ টেস্টে ১৮৮ রানের ইনিংস খেলেছিলেন এই স্কটিশ, যা তাঁর টেস্ট ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ।২০০৮ সালে দ্য টাইমসে লেখা মাইক আথারটনের এক কলাম থেকে জানা যায়, ১৯৭৪ অ্যাশেজে ডেনেসের ফর্ম নিয়ে চারদিকে সমালোচনা এত বেশি হয়েছিল যে, বিদ্রুপ করে চিঠিও পাঠানো হয়েছিল তাঁকে। তাঁর কাছে পৌঁছানো একটি খামের ওপরে প্রাপক হিসেবে লেখা ছিল ‘মাইক ডেনেস, ক্রিকেটার’। ভেতরে লেখা ছিল ‘এই চিঠি যদি তুমি পেয়ে থাকো, তার অর্থ হচ্ছে তোমার সামর্থ্যের ওপর পোস্ট অফিস আমার চেয়ে বেশি আস্থা রাখে।’
এখন চিঠির যুগ নেই। ভক্ত–সমর্থকদের মত প্রকাশের জন্য আছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। আর সেখানেই প্রতিনিয়ত সমালোচনায় বিদ্ধ হচ্ছিলেন রোহিত। ৩৭ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান চলতি বোর্ডার–গাভাস্কার ট্রফির তিন টেস্টে ৫ ইনিংস ব্যাট করেছেন। আউট হয়েছেন যথাক্রমে ৩, ৬, ১০, ৩, ৯ রানে। সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের বিপক্ষে চেন্নাই টেস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৫ ইনিংসে পঞ্চাশ পার হতে পেরেছেন মাত্র একবার। ধারাবাহিকভাবে ফর্ম এত খারাপ থাকায় আগেই হয়তো বাদ পড়তেন, যদি অধিনায়ক না হতেন।
এখন সিডনিতে নিজেকে বাদ দেওয়া রোহিতের টেস্ট ক্যারিয়ারই অনিশ্চয়তার মুখে। অস্ট্রেলিয়া সফরে ভারতের আর কোনো ম্যাচ নেই। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে জায়গা করতে না পারলে ভারতের পরের টেস্ট আরও ৬ মাস পর, পরের চ্যাম্পিয়নশিপ চক্রে। সেক্ষেত্রে ভবিষ্যতে চোখ রেখে নির্বাচকেরা তাঁকে বিবেচনা করবেন কি না, অথবা রোহিত নিজেই ততদিন দলের সঙ্গে ঝুলে থাকতে চাইবেন কি না সেটা এক বড় প্রশ্ন।
ফজর | ৫.২১ মিনিট ভোর |
---|---|
যোহর | ১.৩০ মিনিট দুপুর |
আছর | ৩.৪৭ মিনিট বিকাল |
মাগরিব | ৫.২৬ মিনিট সন্ধ্যা |
এশা | ৬.৪৪ মিনিট রাত |
জুম্মা | ১২.৩০ মিনিট দুপুর |