কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: মোঃ মুনজুরুল ইসলাম 

কুষ্টিয়া জেলার বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে সরিষার আবাদ। কুষ্টিয়ার বিভিন্ন উপজেলার মাঠ যেন প্রকৃতিতে সেজেছে তার আপন মহিমায়। তবে এবারে কুষ্টিয়ার বিস্তীর্ণ মাঠ সরিষা ক্ষেত বলে দিচ্ছে বড় কোন প্রাকৃতিক দুুর্যোগ না হলে চলতি মৌসুমে সরিষার বাম্পার ফলন হবে। কৃষকের চোখে আনন্দের ঝিলিক। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) কুষ্টিয়ার কুমারখালি উপজেলার ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে কৃষক পর্যায়ে উন্নত মানের ডাল, তেল ও মসলা বীজ উৎপাদন,সংরক্ষণ ও বিতরণ প্রকল্পের আওতায় স্থাপিত বারি সরিষা-১৭ এর উপর মাঠ দিবস ও রিভিউ ডিসকাশন অনুষ্ঠিত হয়। সরেজমিনে বিভিন্ন গ্রামের মাঠ ঘুরে ও সরিষা চাষিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে- চলতি মৌসুমে প্রতি বিঘা জমি থেকে ৭-৮ মণ সরিষা উৎপাদন হবে। লাভজনক এবং সরিষা চাষের অনুকূল পরিবেশের কারণে এবার চলতি রবি শস্য মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং সরিষাক্ষেতে রোগবালাই কম হওয়ায় বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষক ও কৃষি বিভাগ। কুষ্টিয়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের হিসেব মতে চলতি বছরে সরিষার অর্জিত লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৭ হাজার ৩১০ হেক্টর জমিতে। কিন্তু চলতি মৌসুমে জেলায় এবার ৯ হাজার ১৪৭ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। গত বছরের চেয়ে এবার বেশি জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বটতৈল গ্রামের সরিষাচাষি জাফর মন্ডল জানান, প্রতিবিঘা জমিতে সরিষা চাষে খরচ হয় সর্বোচ্চ তিন হাজার টাকা। প্রতিমণ সরিষা বিক্রি করা যায় দুই হাজার ৫’শ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত। প্রতি বিঘাতে সাত মণ সরিষা উৎপাদন হলে বিঘা প্রতি ১৫ হাজার টাকা লাভ করা যায়। এছাড়া সরিষা আবাদে তেমন সেচের প্রয়োজন হয়না। তাছাড়া মাত্র তিনমাস সময়ে সরিষা আবাদ করা যায়। সরিষার বড় শত্রু জাব পোকা। এবার জাব পোকার আক্রমণ না থাকায় সরিষার ফলন ভালো হবে বলে আশা করছেন তিনি। কুমারখালি উপজেলার বাঁশগ্রামের সরিষা চাষি মোঃ  আজাদ বলেন, নিজের প্রয়োজন মেটাতে প্রতি বছর ১ বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করি। তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এবার ২ বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করেছি। আশা করছি অন্য বছরের তুলনায় এবার সরিষার ফলন ভালো হবে। চলতি বছরে কুষ্টিয়ার সরিষার বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করে কুষ্টিয়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক সুফি মোঃ রফিকুজ্জামান। তিনি বলেন চলতি মৌসুমে প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় জেলায় প্রায় কৃষককে বিনামূল্য সরিষার বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। গত বছরের চেয়ে এবার প্রায় ২ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। এর প্রধান কারণ হচ্ছে বাজারে সরিষা এবং ভোজ্য তেলের দাম বেশি। রবিশস্য চাষের এবার অনুকূল পরিবেশ বিরাজ করছে। এমন প্রাকৃতিক পরিবেশ পেলে মানুষ আবার সরিষা আবাদে ফিরে আসবে। আবহাওয়া শেষ পর্যন্ত অনুকূলে থাকলে এবার সরিষার বাম্পার ফলন হবে বলেও তিনি আশাবাদী।