কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: মোঃ মুনজুরুর ইসলাম
কুষ্টিয়ায় পেঁয়াজের বাম্পার ফলনের আশ কৃষকদের। লাখ্যমাত্রা ছাড়িয়ে পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে কুষ্টিয়ায়। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায় বর্তমানে জমিতে পেঁয়াজ পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। তবে পেঁয়াজের উৎপাদন ভালো হলেও কাঙ্খিত দাম না পাওয়ার সংকায় কিছুটা হতাশ চাষিরা। জেলা কৃষি সপ্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, এ বছরে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় পেঁয়াজের বাম্পার ফলনের আশা করছেন তারা। কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার জিয়ারখী ইউনিয়নের সবুজ জানান, এ বছর ৫ বিঘা জমিতে পেঁয়াজের চাষ করেছি। পেঁয়াজ চাষে খরচ হয়েছে প্রায় বিঘা প্রতি ৪০ হাজার টাকা। প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় ৫০-৭০ মণ পেঁয়াজ পাবো আশা করছি। একই গ্রামের হামজারুল ইসলাম জানান, ‘এবার পেঁয়াজের ফলন ভালো হবে। কৃষি বিভাগ চাষিদের পেঁয়াজ উৎপাদনে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছে। কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের রমজান আলী জানান, ‘গত বছর পেঁয়াজ চাষে ভালো লাভবান হয়েছি। এবারও তিন বিঘা জমিতে পেঁয়াজের চাষ করেছি। আশা করছি গত বছরের চেয়ে এ বছর পিয়াজের ফলন বেশি হবে।’ তবে বাজার দর ভালো হলে ভালো লাভ হতে পারবো। একই এলাকার নয়ন আলী জানান, ‘এ বছর আমি ৪ বিঘা জমিতে পেঁয়াজের চাষ করেছি। এখন পর্যন্ত পেঁয়াজ স্বাভাবিক আছে যদি নতুন কোন পোকা- মাকড়ের আক্রমণ না হয়। তবে পেঁয়াজের বাম্পার ফলনের আশা করছি। পদ্মা ও গড়াই নদীর তীরবর্তী কুষ্টিয়া জেলার মাটি বেলে ও বেলে দোআঁশ হওয়ার কারণে পেঁয়াজের ফলনও ভালো হয়। এবছর দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকরা পেঁয়াজ চাষে আরো বেশি আগ্রহী হচ্ছেন। জেলার দৌলতপুর উপজেলার চিলমারী, রামকৃষ্ণপুর, ফিলিপ নগর, মহিষকুন্ডি আদাবাড়িয়া ইউনিয়নসহ পদ্মা ও গড়াই নদী তীরবর্তী অঞ্চলে ব্যাপকভাবে পেঁয়াজের চাষ হয়েছে। একই চিত্র দেখা গেছে জেলার খোকসা, কুমারখালী, কুষ্টিয়া সদর, মিরপুর ও ভেড়ামারা উপজেলাতেও। এসব এলাকার কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, পেঁয়াজের দাম তুলনামূলক ভাবে অন্যান্য ফসলের চেয়ে বেশি হওয়ার কারণে তারা পেঁয়াজ চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। কুষ্টিয়া সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রূপালী খাতুন জানান, কুষ্টিয়া সদর উপজেলার প্রায় সবগুলো ইউনিয়নে কৃষকরা এবার পেঁয়াজের চাষ করেছেন। কৃষি বিভাগ কৃষকদের কারিগরি সহায়তার পাশাপাশি বিনামূল্যে সার, বীজসহ অন্যান্য পরামর্শ দিয়ে আসছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুষ্টিয়ার উপ-পরিচালক সুফি মো. রফিকুজ্জামান জানান, এবছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকাই এবার পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হবে। এই মৌসুমে উৎপাদিত পেঁয়াজ জেলার চাহিদা পূরণ করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। এ অঞ্চলের কৃষকরা যাতে আরো বেশি পেঁয়াজ চাষে উদ্বুদ্ধ হয় সেই জন্য কৃষকদের মাঝে কৃষি প্রণোদনার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।