কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: মো. মুনজুরুল ইসলাম
কুষ্টিয়ার ছয়টি উপজেলার প্রতিটি গ্রামে এখন পাট কেটে জাগ দেওয়া ও পাট ধোয়ার ব্যস্ততা চোখে পড়ছে। চলতি মৌসুমে জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি জমিতে পাটের আবাদ হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা দিলেও, জলবায়ুর অনিশ্চয়তা কিছুটা চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিগত কয়েকদিন সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, আষাঢ় মাস শেষে শ্রাবণের মাঝামাঝি সময়ে এসে অধিকাংশ কৃষক পাট কাটার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। কেউ কেউ কাটা পাট জাগ দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন, আবার অনেকেই ইতোমধ্যেই পাট জাগে ফেলে দিয়েছেন। কৃষকেরা জানিয়েছেন, মৌসুমের শুরুতে সঠিক সময়ে বৃষ্টি হওয়ায় পাটের বৃদ্ধি ভালো হয়েছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে আশানুরূপ বৃষ্টি না হওয়ায় পাট পচানোর জন্য পর্যাপ্ত পানি পাওয়া যাচ্ছে না। স্থানীয় কৃষক মজিবর রহমান বলেন, “পাট তো ভালোই হয়েছে, কিন্তু এখন জাগ দেওয়ার জন্য পানি পাওয়া দুষ্কর। খাল-বিল শুকিয়ে গেছে, অনেকেই গভীর জায়গা খুঁড়ে কোনোরকমে জাগ দিচ্ছে। এভাবে পাটের মান ঠিক রাখা কঠিন হবে।” আরেক কৃষক রফিকুল ইসলাম জানান, “পাট পচানোর জন্য যদি পর্যাপ্ত পানি না মেলে, তাহলে আঁশ ভালো হবে না। এতে করে বাজারে ভালো দাম পাওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে।” জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চলতি বছর কুষ্টিয়ায় প্রায় ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় বেশি। কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সহায়তা ও পরামর্শ দিচ্ছেন। তারা আশা করছেন, যদি আগামী কয়েকদিনের মধ্যে পর্যাপ্ত বৃষ্টি হয়, তাহলে পাটের গুণগতমান ঠিক রাখা সম্ভব হবে। এদিকে, বাজারে নতুন পাট উঠতে শুরু করায় অনেক কৃষকই ভালো দামের আশায় পাট শুকানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তবে পানির অভাবে পাট পচন ভালো না হলে সোনালি আঁশের সেই সোনালি স্বপ্নে ভাটা পড়ার শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মাঠে-মাঠে চলছে পাট কাটার কাজ। বর্ষা মৌসুমে উপযুক্ত পানি থাকার কারণে পাট জাগ দেওয়াতেও সুবিধা হচ্ছে কৃষকদের। প্রাকৃতিক অনুকূল পরিবেশ এবং আগাম বৃষ্টিপাতের কারণে পাটের ফলনও আশানুরূপ হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তারা। স্থানীয় কৃষক আবুল কাশেম বলেন, “এ বছর পাটের গাছ লম্বা ও মোটা হয়েছে। ভালো দাম পেলে আমাদের কষ্ট সার্থক হবে।”তবে, শ্রমিক সংকট ও জাগ দেওয়ার উপযুক্ত খালবিলের অভাব কিছু এলাকায় সমস্যা তৈরি করছে বলে অভিযোগ করেছেন কিছু কৃষক। কুষ্টিয়ার বিভিন্ন এলাকায় কৃষকেরা বর্তমানে পাট কাটার পর ধোয়া ও জাগ দেওয়ার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। মাঠে মাঠে পাট ধোয়া, আঁশ ছাড়ানো ও শুকানোর চিত্র চোখে পড়ছে। সঠিক সময়ে পাট চাষের উপযুক্ত আবহাওয়া এবং পরিশ্রমের ফলে এবার আশানুরূপ ফলন হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষকেরা। এখন তারা সেই পাট ধুয়ে বাজারজাতকরণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। প্রচণ্ড রোদ ও বৃষ্টির মধ্যে কৃষকেরা পরিবার-পরিজন নিয়ে পাট ধোয়ার কাজে ব্যস্ত রয়েছেন। কেউ কেউ পুকুর, খাল কিংবা নদীতে পাট ধুয়ে আঁশ ছাড়াচ্ছেন। অন্যদিকে, বাজারে ভালো দামের আশায় কৃষকেরা গুণগত মানসম্পন্ন পাট প্রক্রিয়াজাত করতে সচেষ্ট।
ফজর | ৫.২১ মিনিট ভোর |
---|---|
যোহর | ১.৩০ মিনিট দুপুর |
আছর | ৩.৪৭ মিনিট বিকাল |
মাগরিব | ৫.২৬ মিনিট সন্ধ্যা |
এশা | ৬.৪৪ মিনিট রাত |
জুম্মা | ১২.৩০ মিনিট দুপুর |