| বঙ্গাব্দ
ad728
ad728

কোলের শিশুকে হারানোর দুঃস্বপ্ন এখনো তাড়িয়ে বেড়ায় সিলভিয়াকে

রিপোর্টারের নামঃ MD MUNZURUL ISLAM
  • আপডেট টাইম : 26-12-2024 ইং
  • 45735 বার পঠিত
কোলের শিশুকে হারানোর দুঃস্বপ্ন এখনো তাড়িয়ে বেড়ায় সিলভিয়াকে
ছবির ক্যাপশন: কাট সিলভিয়ার দুই বছর বয়সী মেয়ের চোখের দিকে শেষবার তাকানোর ব্যথাতুর স্মৃতি

কাট সিলভিয়ার দুই বছর বয়সী মেয়ের চোখের দিকে শেষবার তাকানোর ব্যথাতুর স্মৃতি এখনো দগদগে হয়ে আছে। ২০ বছর আগে আজকের দিনটি উত্তর সুমাত্রার বান্দা আচেহ শহরে অন্য দশটি দিনের মতোই শুরু হয়েছিল। কিন্তু সিলভিয়া আচমকা দেখলেন, তাঁদের বাসার সামনে দিয়ে মানুষ দৌড়ে পালাচ্ছে। দৌড়াতে দৌড়াতে তারা বলছে, পানি আসছে, পানি। শিশুকন্যা সিথিকে বুকে জড়িয়ে কী করবেন, তা ভেবে ওঠার আগেই কাট সিলভিয়াদের বাসায় সাগরের ঢেউ আছড়ে পড়তে শুরু করে। কয়েক মিনিটের মধ্যে এসব হয়ে গেল। এতে তিনি হতভম্ব হয়ে যান। সিলভিয়া আল–জাজিরাকে বলেন, ‘তার (সিথি) চোখের দিকে তাকানো এবং আমার চোখের দিকে তার তাকানোর সেই মুহূর্ত আমি বর্ণনা করতে পারব না। আমরা একে অপরের দিকে বিমূঢ় হয়ে তাকিয়ে ছিলাম।’এমনকি সে কান্না পর্যন্ত করতে পারছিল না, কোনো শব্দও করতে পারছিল না। সে কেবল ফ্যালফ্যাল করে আমার দিকে তাকিয়ে ছিল। আমি জেনে গিয়েছিলাম যে আমরা আলাদা হয়ে যাচ্ছি’, বলছিলেন সিলভিয়া। সুনামি সিথিকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। সিলভিয়া দৌড়াচ্ছিলেন। তাঁর মনে হচ্ছিল, তিনি ‘ওয়াশিং মেশিনের’ মধ্য দিয়ে দৌড়াচ্ছেন। এভাবে প্রায় ১৫ মিনিট দৌড়ানোর পর তিনি একটি বাসার ছাদে উঠতে সক্ষম হন। এরপর তিনি ধীরে ধীরে উপলব্ধি করতে শুরু করেন, কী বিশাল ধ্বংসযজ্ঞই না হয়ে গেল। সিলভিয়া বলেন, ‘আমার খুব, খুব বেশি মন খারাপ হয়ে যায়। আমার মেয়ে নেই, তা ভাবতেই কী রকম মন খারাপ হয়েছিল, সেই অনুভূতি আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না।’

সিলভিয়ার স্বামী বুদি পারমানাও সুনামির তোড়ে ভেসে গিয়েছিলেন। ভেসে যেতে যেতে তিনি একটি নারকেলগাছের চূড়ায় আটকে গিয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে পরিবারের সদস্যদের খুঁজতে গিয়ে ক্লান্ত–বিধ্বস্ত হয়ে তিনি হাঁটাচলার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন। বিধ্বস্ত অবস্থায় তাঁকে রেডক্রসের সদস্যরা খুঁজে পেয়েছিলেন। শুরুতে তাঁরা তাঁকে মৃত ভেবেছিলেন। সিলভিয়া ও বুদি এক সপ্তাহ পরে মেদান শহরে পরস্পরের দেখা পান। এ শহরটি তাঁদের নিজেদের শহর বান্দা আচেহ থেকে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এর পর থেকে এখন পর্যন্ত সিথির কোনো হদিস পাওয়া যায়নি।

নিজেদের ছোট মেয়ের ভাগ্যে কী ঘটেছিল, তা জানতে না পারার শোক এই দম্পতিকে এখনো তাড়িয়ে বেড়ায়। ২০ বছর আগে ভারত মহাসাগরের এই সুনামি ছিল মানব ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি প্রাণঘাতী ও সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক। আশার কথা হলো, ইন্দোনেশিয়ায় ২০০৪ সালে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া একটি মেয়ে ১০ বছর পর ২০১৪ সালে পরিবারকে খুঁজে পেয়েছে। সুনামির সময় তার বয়স ছিল চার বছর। এই ঘটনা থেকে এখনো আশায় বুক বেঁধে আছেন সিলভিয়া ও বুদি। তাঁদের আশা, কোনো একদিন তাঁরাও তাঁদের দুই বছর বয়সে সুনামিতে নিখোঁজ সিথির দেখা পাবেন।

ad728

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ad728
ad728
ফেসবুকে আমরা...
নামাজের সময়সূচী
জাতীয় সঙ্গীত
©সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃ আলোর পথ | আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ
সকল কারিগরী সহযোগিতায় অনুপম