কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: মোঃ মুনজুরুল ইসলাম
কুষ্টিয়ায় ফুলকপি চাষ করে লাভবান হয়েছেন কৃষকেরা। স্বল্প সময়ে চাষ এবং উৎপাদন খরচও কম,তাই ফুলকপি চাষে আগ্রহী এই অঞ্চলের কৃষকেরা। শনিবার (২১ ডিসেম্বর) সকালে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় কৃষকেরা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন তাদের ফুলকপি চাষ নিয়ে। ফুলকপির জমিতে তারা সার্বক্ষণিক সময় দিচ্ছেন। সবসময় জেলাজুড়েই কৃষকরা ফুলকপি আবাদ করে থাকেন। তবে এবার বাজারের দাম ভালো পাওয়ার আশায় কৃষি অফিসের পরামর্শে ও সহযোগিতায় কৃষকরা চাষ করছেন ফুলকপি। এ বছরে কুষ্টিয়া জেলার ছয় উপজেলায়ই ফুলকপি চাষ করা হয়েছে। আর কুষ্টিয়ায় বাণিজ্যিকভাবে ফুলকপি চাষ ও কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে প্রশিক্ষণ, প্রদর্শনীসহ উপকরণ দিয়ে সহযোগিতা করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার অনেক এলাকার কৃষকেরা ফুলকপি চাষ করে। কৃষি অফিস থেকে ফুলকপি চাষের বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। তারা ফুলকপির পাশাপাশি অন্যান্য সবজি হিসাবে মরিচ, বাঁধাকপি, টমেটো, সিম, বেগুন, আলু চাষ করে। এ বছর ফুলকপি চাষ করে কৃষকেরা বেশ ভালো ফলন পেয়েছে। কৃষি অফিস থেকে বীজ, সার, পরিচর্যার খরচও দিয়ে থাকে। কৃষি অফিস থেকে ফুলকপির চারা, জৈবসার, রাসায়নিক সার, হলুদ ফাঁদ এবং ফেরোমন ফাঁদ এবং পরিচর্যার জন্য খরচও দিয়েছে। ফুলকপির গাছগুলো খুবই ভালো হয়েছে, বর্তমানে বাজারে ফুলকপির চাহিদাও ভালো। মিরপুর উপজেলার ছাতিয়ান এলাকার কৃষক আমজাদ হোসেন বলেন, অন্যান্য সবজির চেয়ে ফুলকপির চাষ বেশি লাভজনক হওয়ায় আমি এ বছরে দুই বিঘা জমিতে ফুলকপি চাষ করেছি। অনেক গাছেই ফুল ধরেছে। কিছু ফুল বিক্রিও করেছি, তবে আশা করছি ভালো ফলন ও দাম পাব।তিনি আরো জানান শীতকালীন সবজির দাম মৌসুমের শুরুতে এবং শেষে ভালো পাওয়া যায়। কুষ্টিয়া পৌর মিউনিসিপাল বাজারের ব্যবসায়ী তুহিন আলী জানান, শীতকালীন সবজি বাজারে পাওয়া গেলেও দাম ভালো রয়েছে। ফুলকপি এখন ৪০-৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ফুলকপিতে প্রচুর ফাইবার আছে যা রক্তে কোলস্টেরল কমায়। ফুলকপি ওজন কমাতে সহায়তা করে। ফুলকপি মস্তিষ্ক প্রখর করে, সর্দি-কাশি প্রতিরোধ করে, কম ক্যালরিযুক্ত ও উচ্চমাত্রার আঁশসমৃদ্ধ ফুলকপি চুল ও ত্বকের জন্য উপকারী। ফুলকপি পরিপাকতন্ত্রকে ভালো রাখতে সাহায্য করে। ইহা দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়, এতে রয়েছে ক্যালসিয়াম ও ফ্লোরাইড যা দাঁত ও মাড়ির উপকার করে। ক্যানসার প্রতিরোধ করতে পারে, এর সালফোরাপেন ক্যানসার কোষকে মেরে টিউমার বাড়তে দেয় না। ফুলকপিতে সালফোরাপেন আছে, তা হৃদ্রোগের বিরুদ্ধে কাজ করে। ফুলকপিতে আছে ভিটামিন ‘বি’, ‘সি’ ও ‘কে’, যা এ সময়ের সর্দি, ঠান্ডা, কাশি জ্বর ভাব, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, গা-ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে এবং রোগ প্রতিরোধ করে। তাই শীত মৌসুমে অন্যান্য সবজির পাশাপাশি ফুলকপি চাষ করে লাভবান হচ্ছে যেমন কৃষকেরা তেমনি সবজি খেয়ে সুস্থ থাকতে পারবে সাধারণ মানুষ।