| বঙ্গাব্দ
ad728
ad728

কুষ্টিয়ায় মিনিকেট চালের দাম বেড়েছে ১৪ দিনে কেজিতে ৭ টাকা

রিপোর্টারের নামঃ MD MUNZURUL ISLAM
  • আপডেট টাইম : 18-03-2025 ইং
  • 11246 বার পঠিত
কুষ্টিয়ায় মিনিকেট চালের দাম বেড়েছে ১৪ দিনে কেজিতে ৭ টাকা
ছবির ক্যাপশন: মিনিকেট চালের দাম বেড়েছে ১৪ দিনে কেজিতে ৭ টাকা

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: মোঃ মুনজুরুল ইসলাম 
কুষ্টিয়ার খাজানগরে অটো রাইচ মিল আছে ৬৪টি। তবে এর মধ্যে অর্ধেক মিল প্রায় বন্ধ। এসব মিলে কী পরিমাণ ধান মজুত, তার প্রতিদিনের একটি হিসাব মিল মালিকেরা অফিসে পাঠান। সেই হিসাব ঠিক আছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে খাদ্য পরিদর্শকেরা নিয়মিত মিল পরিদর্শন করেন। মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) দুপুর ১২টায় জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আল ওয়াজিউর রহমান বলেন, গত শুক্রবার সকাল থেকে মিলগেটে মিনিকেট চাল বিক্রি করছে কেজিপ্রতি ৮৪ টাকা দরে; যা গত ১ মার্চ ছিল ৭৭ টাকা। এখানে আপাতত থেমে আছে। সামনে থামবে কি না জানি না। তবে বাজারে ধানের দাম ঊর্ধ্বমুখী। আর বাজারে ধানও নেই। এ জন্য চালের দাম বাড়ছে।’ জানতে চাইলে গোল্ডেন অটো রাইচ মিলের মালিক জিহাদুজ্জামান জিকু বলেন, ‘চালের দাম তুলনামূলকভাবে কমই বাড়ানো হয়েছে। দাম কেজিপ্রতি ১৫ থেকে ১৭ টাকা বাড়ানো উচিত। এরপরও কম বাড়ানো হয়েছে। বাজারে ধান নাই। যা পাওয়া যাচ্ছে, তার দাম গড়ে মণপ্রতি বাড়তি ৩০০ টাকা বেশি দিয়ে কিনতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক তৌফিকুর রহমান বলেন, খাজানগরে আজ সকাল থেকে অভিযান চালানো হচ্ছে। চালের দাম বাড়ানোর যৌক্তিকতা দেখতে কাগজপত্র যাচাই করা হচ্ছে। মিনিকেট চালের দাম কমানোর বিষয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে। খাজানগর এলাকায় মিলমালিক ও খাদ্যসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বর্তমানে কুষ্টিয়ার খাজানগর মোকামে ধান ও চালের মজুত অর্ধেকেরও নিচে নেমেছে। বিশেষ করে সরু ধান ও চালের মজুত তলানিতে। কিছু মিলে মোটা ও মাঝারি মানের ধান–চালের মজুত আছে। সেটাও অন্য সময়ের তুলনায় অনেক কম বলে জানিয়েছেন মিলমালিকেরা। এদিকে গত কয়েক দিনের তুলনায় সরু ধানের দাম নতুন করে প্রতি মণে ১০০ থেকে ৩০০ টাকা বেড়েছে। এতে করে চালের দাম গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিপ্রতি ৭ টাকা বাড়িয়েছে। মিলগেটে বর্তমানে সরু চাল ৮৪ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। চলতি মাসের ১ থেকে ১৪ তারিখ পর্যন্ত ৫ দফায় দাম বেড়েছে।এদিকে চালের দাম বাড়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে খাজানগরের বড় যে ১৫ থেকে ২০টি মিল আছে, সেখানে বারবার অভিযান পরিচালনা ও মজুত খতিয়ে দেখছে খাদ্য বিভাগ। তবে তাদের এসব প্রতিষ্ঠানে পাক্ষিক ছাঁটাই ক্ষমতা অনুযায়ী যে পরিমাণ ধান ও চাল মজুত রাখার সুযোগ আছে, তার অর্ধেকেরও কম মজুত পেয়েছে খাদ্য বিভাগ। বর্তমানে পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবদুল খালেক বলেন, এখন আমন মৌসুম শেষের দিকে। বোরো ধান বাজারে আসতে আরও মাসখানেক সময় লাগবে। এ সময়ে ধান ও চালের মজুত সাধারণত কম থাকে। বাজারে ধান নেই। এ জন্য অর্ধেকের বেশি মিল বন্ধ রয়েছে।মিলমালিক ও খাদ্য অফিসের তথ্যমতে, ৩ ড্রায়ারের একটি অটো রাইচ মিলে ২৪ ঘণ্টায় কমপক্ষে ৩ হাজার ৬০০ মণ ধানের প্রয়োজন পড়ে। ১টি ড্রায়ার চালাতে ২৪ ঘণ্টায় ৬০০ মণ ধানের প্রয়োজন পড়ে। ৩ হাজার ৬০০ মণ ধান থেকে চাল উৎপাদন হয় ২ হাজার ৩৪০ মণ। অর্থাৎ ১ মণে ২৬ কেজি চাল উৎপাদন হয়। স্বাভাবিক সময়ে একটি মিলে ৩ হাজার টন থেকে ৪ হাজার ৫০০ টন পর্যন্ত চাল মজুত থাকে। এখন সেখানে মজুত আছে ৩৬০ টন থেকে ৪০০ টন পর্যন্ত।গোল্ডেন অটো রাইচ মিলের মালিক জিহাদুজ্জামান জিকু বলেন, ‘আমার মিলে প্রতিদিন কমপক্ষে ৬০ ট্রাক ধান লাগে। সেখানে আজ ধান পেয়েছি মাত্র এক ট্রাক। মিল বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া কোনো উপায় নাই।’ খাজানগরের অন্যতম চাল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান দাদা রাইচ মিল। এই মিলের ৬টি ড্রায়ার আছে। স্বাভাবিক সময়ে এই প্রতিষ্ঠান গড়ে প্রতিদিন ৪৬ টন চাল উৎপাদন করত। এখন ধানের অভাবে বেশির ভাগ সময় ৪ থেকে ৫টি ড্রায়ার বন্ধ থাকছে। মিলমালিক আরশাদ আলী বলেন, দেশে ধান ও চালের মজুতের সঠিক পরিসংখ্যান নেই। আর দেশের বাইরে থেকে যে এলসির চাল আসছে, সেটা দিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ কোনোভাবেই সম্ভব হচ্ছে না। এবার অভ্যন্তরীণ সংকট প্রকট হওয়ার পেছনে ধানের সংকট ও দাম বাড়ার অন্যতম কারণ। বাংলাদেশ অটোর মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিলমালিক সমিতির কুষ্টিয়া শাখার সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদিন প্রধান বলেন, খাজানগর মোকামে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় এক মজুত একেবারেই কম। মিলে ধান ও চালের মজুত থাকলে বাজার স্বাভাবিক থাকে। এখন অর্ডার নিয়েও চাল দিতে পারছেন না বেশির ভাগ মিলমালিক। জয়নাল আবেদিন আরও বলেন, গত শনিবার উত্তরবঙ্গের কয়েকজন মিলমালিকের কাছ থেকে তাঁরা ধান কিনেছেন ২ হাজার ২০০ টাকা মণ দরে। গত সপ্তাহেও সরু ধানের এই বাজারদর ছিল ১ হাজার ৯০০ টাকা। ফরিয়া ও কৃষকদের ঘরে কোনো সরু ধান নেই এই মুহূর্তে। উত্তরবঙ্গের অনেক মিলমালিকের কাছে কিছু ধান মজুত আছে। তাঁরা বেশি দামে বিক্রি করছেন। বোরো ধান বাজারে না আসা পর্যন্ত সংকট থাকবে। একাধিক মিলমালিক বলেন, ‘স্বাভাবিক সময়ে খাজানগর মোকাম থেকে দিনে ১৫০ থেকে ২০০ ট্রাকের বেশি চাল ঢাকাসহ সারা দেশে বাজারে যায়। এখন সেই সংখ্যা অনেক কম। কোনো মিল দিনে এক থেকে দুই ট্রাক চাল ঢাকায় যাচ্ছে। এখন সব মিলিয়ে খাজানগরের অটো মিলগুলোতে গড়ে ১০ থেকে ২৫ টন পর্যন্ত সরু চাল মজুত থাকতে পারে। কোনো কোনো বড় মিলে হয়তো বেশি থাকতে পারে। আর ধানের মজুত নেই বললেই চলে। খাদ্য বিভাগের দেওয়া তথ্যমতে, গোল্ডেন অটো রাইচ মিলে ১ মার্চ মিনিকেট চাল বিক্রি হয়েছে ৭৭ টাকায়, ৪ মার্চ ৭৮ টাকায়, ৭ মার্চ ৭৯ টাকায়, ৯ মার্চ ৮০ টাকা, আর ১৪ মার্চ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৮৪ টাকায়। খাজানগর মোকামে গোল্ডেন অটো রাইচ, সুবর্ণা অটো রাইচ, দেশ অ্যাগ্রো ফুড, জাফর অ্যাগ্রো ফুডের মতো বড় কিছু প্রতিষ্ঠান দাম বেশি বাড়িয়েছে।

ad728

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ad728
ad728
ফেসবুকে আমরা...
নামাজের সময়সূচী
জাতীয় সঙ্গীত
©সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃ আলোর পথ | আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ
সকল কারিগরী সহযোগিতায় অনুপম