১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত অপরাধগুলো এবং এমনকি অতিসম্প্রতি জুলাই-আগস্ট মাসের প্রেক্ষাপটে ঘটে যাওয়া অপরাধগুলো নিয়ে নানা ধরনের আলোচনায় ’গণহত্যা’ শব্দটির একচ্ছত্র ব্যবহার লক্ষণীয়। অনেক দিন ধরেই এ দেশে ‘জেনোসাইড’ শব্দের বাংলা অনুবাদ ভুলভাবে করা হচ্ছে ‘গণহত্যা’; অন্তত ‘জেনোসাইড’ শব্দের বুৎপত্তিগত অর্থ এবং সেটার ঐতিহাসিক পরিপ্রেক্ষিত বিবেচনায় নিলে তা-ই মনে হবে।
জ্ঞানতাত্ত্বিক ধারণা হিসেবে ‘জেনোসাইড’ ও ‘গণহত্যা’ দুটি একই বিষয় নয়। ‘মাস কিলিং’ অর্থে গণহত্যা ধারণার চেয়ে জেনোসাইড ধারণা আরও বৃহৎ ও বিস্তৃত। আর্জেন্টিনার সমাজতাত্ত্বিক ড্যানিয়েল ফেরস্তেইন বলেছেন, যারা জেনোসাইড ঘটায়, তাদের কাছে জেনোসাইড ঘটানো সামাজিক রীতিনীতির মতো একটি চর্চার বিষয় (জেনোসাইড অ্যাজ সোশ্যাল প্র্যাকটিস)। তিনি বলেন, জাতি বা পরিচয় নিধনের এই চর্চা এতটাই সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায় যে জেনোসাইড সংঘটনকারীদের কাছে জেনোসাইড শুধু একটি নিছক ফৌজদারি অপরাধের ধারণা নয়; বরং এটা তাদের কাছে ক্ষমতা ব্যবহারের একধরনের হাতিয়ার (টেকনোলজি অব পাওয়ার), যার মধ্য দিয়ে তারা বিভিন্ন জাতি, গোষ্ঠী বা পরিচয়কে প্রতিনিয়ত শোষণ ও নিয়ন্ত্রণ (ম্যানেজিং পিপল অ্যাজ গ্রুপ) করে যেতে পারে। এই নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্য দুটি: এক. জনগোষ্ঠী নিধনপ্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সমাজে বিভেদ তৈরি করে বিভিন্ন জাতি, গোষ্ঠী বা পরিচয়ের মধ্যে বিদ্যমান সহযোগিতামূলক সামাজিক সম্পর্কগুলোর ধ্বংস সাধন করা; দুই. নিধনযজ্ঞের ভয়ভীতি দেখিয়ে নতুন ধরনের পরিচয় বা সত্তা এবং সামাজিক সম্পর্ক তৈরি করার প্রচেষ্টা চালানো।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে হলোকাস্টের কথা এখানে স্মরণ করা যেতে পারে। কারণ, আজকের দিনে জেনোসাইডের যে ধারণা প্রচলিত আছে, তা মূলত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন ইহুদি জনগোষ্ঠী নিধন প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক আইন ও রাজনীতির আলোচনায় জায়গা করে নিয়েছে। ‘হলোকাস্ট’ তথা জেনোসাইড সংঘটনের মাধ্যমেই ইহুদি ও অন্যান্য ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর নিধন করে হিটলার ও তাঁর অনুসারীরা মূলত নাৎসি ভাবধারার নতুন জার্মানি প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিল।
ফজর | ৫.২১ মিনিট ভোর |
---|---|
যোহর | ১.৩০ মিনিট দুপুর |
আছর | ৩.৪৭ মিনিট বিকাল |
মাগরিব | ৫.২৬ মিনিট সন্ধ্যা |
এশা | ৬.৪৪ মিনিট রাত |
জুম্মা | ১২.৩০ মিনিট দুপুর |