প্রায় সারা বছর পদ্মাপাড়ে সামান্য মানুষের আনাগোনা থাকলেও ঈদকে কেন্দ্র করে এখানে দর্শনার্থীদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মত। জেলার নানা প্রান্ত থেকে একটু বিনোদনের জন্য বিভিন্ন বয়সী মানুষ ছুটে আসছে পদ্মার চরে। বিশেষ করে উপজেলার ইসলামপুর ও আবেদের ঘাট থেকে শুরু করে বৈরাগীরচর এলাকার পদ্মার জেগে উঠা চরের প্রায় ৪-৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভীড় দেখা গেছে। বিস্তির্ণ এলাকায় স্বাধীনভাবে ঘুরোঘুরি করতে পেরে খুশি দর্শনার্থীরা। ব্যাপক মানুষের সমাগমে কোন বিশৃংখল পরিবেশ সৃষ্টি না হয় সে জন্য বাড়তি সতর্কতামুলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছেন। ঈদেরদিন থেকে শুরু করে আজ অবধি পদ্মার আবেদের ঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পদ্মার ইসলামপুর এলাকা থেকে বৈরাগীরচর পর্যন্ত বিস্তির্ণ এলাকায় জেগে উঠা চরে হাজার হাজার মানুষের আনাগোনা। একটু বিনোদনের জন্য পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরতে এসেছেন তারা। দর্শনার্থীদের মধ্যে ছাত্র ও নব দম্পতিদের সংখ্যা বেশি হলেও বাদ যায়নি বাচ্চা ও বৃদ্ধ বয়সী লোকজনও। দিনের বেলায় রোদের প্রখরতা বেশি থাকায় বিকেলে জেলার নানা প্রান্ত থেকে হাজার হাজার নারী-পুরুষ ভীড় করছেন সেখানে। কেউ এসেছেন স্ত্রী সন্তান নিয়ে, কেউ এসেছেন বাবা, মা, ভাই বোনের সাথে, কেউবা বন্ধু বান্ধবের সাথে আবার কেউ একা একা গেছেন ঘুরতে। তবে তরুণ ও যুব দম্পতির সংখ্যাটাই বেশি লক্ষ্য করা গেছে। মোটরসাইকেল, ভ্যান, ব্যাক্তিগত গাড়িসহ যে যেভাবে পারছেন ছুটে আসছেন পদ্মার চরে। ঢাকাসহ শহরে যান্ত্রিক জীবন ছেড়ে যারা গ্রামে ঈদ করতে এসেছেন তাদের সংখ্যাটাও অনেক। খোলা আকাশের নিচে প্রাণ ভরে মুক্ত বাতাস নেয়ার আনন্দ উপভোগ করছেন তারা। দর্শনার্থীদের কেন্দ্র করে পদ্মাপাড়ে বসেছে অস্থায়ী দোকান। চিপস, কোমলপানীয়, চকলেট, আইসক্রীমসহ নানা পন্য বিক্রয় হচ্ছে সেখানে। স্থানীয়রা জানান, প্রতিবছর ঈদের সময় পদ্মার তীবরর্তি এলাকায় বিনোদন বিপাসুদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেলেও এবারের সংখ্যা অনেক বেশি। বিশেষ করে আবেদের ঘাট ও বৈরাগীরচর এলাকার প্রায় ৪-৫ কিলোমিটার জুড়ে ব্যাপক লোকসমাগম দেখা যাচ্ছে। এলাকাবাসীও দর্শনার্থীদের বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করেন। ঈদের ছুটি পর্যন্ত চরে লোকসমাগম অব্যাহত থাকবে। পরিবার নিয়ে পদ্মার চরে ঘুরতে এসেছেন নাইমুর রহমান। তিনি বলেন, বিশেষ দিন ছাড়া পরিবার নিয়ে ঘোরাঘুরি হয়না। তা ঈদ উপলক্ষে পরিবার নিয়ে পদ্মার চরে ঘুরতে এসে খুব ভালো লাগছে। চরের মধ্যেও যে বিনোদন ঘুরে পাওয়া যায় এখানে না আসলে অনুধাবন করা যাবে না। দর্শনার্থী আরিফুর রহমান জানান, চাকরীর সুবাদে পরিবার নিয়ে ঢাকায় থাকেন। গ্রামে ঈদ করতে এসেছি। স্ত্রী সন্তান নিয়ে পদ্মাপাড়ে ঘুরতে এসে দারুন লাগছে। নদীতে পানি না থাকলেও চরের বালিতে হেটে বেড়ানো অনুভূতি চমৎকার। হাজার হাজার মানুষ দেখে আরো ভালো লাগছে। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জিসান জানান, আমি আগেও কয়েকবার বন্ধুদের সাথে পদ্মার চরে ঘুরতে এসেছিলাম। এবারও বন্ধুদের সাথে এসেছি। তবে এবার খুবই ভালো লাগছে। লোকসমাগমও এবার অনেক বেশি। সরকারীভাবে কিছু উদ্যোগ নেয়া হলে এ অঞ্চলকে একটি ভালো পর্যটন এলাকায় রুপান্তর করা সম্ভব। দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল হাই সিদ্দিকী বলেন, মানুষের আনন্দ বিনোদন নির্বিঘ্ন করতে আইনশৃংখলা বাহিনীকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। দর্শনার্থীদের যাতায়াতসহ চরাঞ্চলে ঘুরাঘুরিতে কোন সমস্যা না হয় সেজন্য পুলিশের টহল টিম রয়েছে।