কুষ্টিয়া প্রতিনিধি মোঃ মুনজুরুল ইসলাম
সাংবাদিকদের সত্য উদঘাটন, অনুসন্ধান ও প্রকাশে নির্ভীক হতে হবে। অর্ধসত্য নয়, সত্য ও অসত্যের মিশ্রণও নয়, তাদের প্রকাশ করতে হবে অখণ্ড ও পূর্ণ সত্য। সত্য প্রকাশ করতে গিয়ে সাংবাদিকদের চাকরির ঝুঁকি, জীবনের ঝুঁকিসহ নানা ঝুঁকি নিতে হবে বলে মন্তব্য করে বিএফইউজে মহাসচিব প্রশ্ন তোলেন, ‘সাংবাদিকরা এই ঝুঁকি না নিলে সত্য প্রতিষ্ঠিত হবে কীভাবে?’ অসহায় আত্নসমর্পণ সাংবাদিকদের মানায় না, কিন্তু বিগত সরকারের সময় সাংবাদিকদের বিরাট অংশকে সেল্ফ সেন্সরশিপের মাধ্যমে অসহায় আত্মসমর্পণ করতে দেখা গেছে বলে জানান তিনি।রবিবার (২৩ মার্চ) সন্ধ্যায় কুষ্টিয়া সাংবাদিক ইউনিয়ন আয়োজিত আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে এসব কথা বলেন তিনি। কুষ্টিয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আবদুর রাজ্জাক বাচ্চুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমি, সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন, কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি আল মামুন সাগর, জামায়াতের সেক্রেটারি সুজা উদ্দিন জোয়ার্দার, ইসলামি আন্দোলনের আহমদ আলী, বিএফইউজের দফতর সম্পাদক আবু বক্কর, কুষ্টিয়া জজ কোর্টের পিপি সিরাজুল ইসলাম ও কুষ্টিয়া আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাতিল মাহমুদ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন শামীম উল হাসান অপু। সাংবাদিকদের উদ্দেশে কাদের গনি চৌধুরী বলেন, ‘জীবনে কোন ক্ষেত্রে মিথ্যার সঙ্গে আপস করা চলবে না। তাহলে সাংবাদিকতা হবে না। সত্যের তরে দৈত্যের সাথে লড়াই করাই সাংবাদিকতা। সত্য প্রকাশই হতে হবে গণমাধ্যমের একমাত্র অঙ্গীকার।’ সাংবাদিকতাকে সবচেয়ে জীবন্তু ও আধুনিক পেশা হিসিবে অভিহিত করে এই সাংবাদিক নেতা বলেন, ‘বুদ্ধিবৃত্তিক পেশা, সাংবাদিকতা কখনই মূর্খজনের পেশা নয়। পেশা হিসেবেই সাংবাদিকতা বুদ্ধিদীপ্ত মানুষের পেশা। কিছু মৌলিক কাঠামোই সাংবাদিকতাকে আধুনিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক পেশার শক্ত ভিত্তি দিয়েছে। একটি সমাজে মত প্রকাশের স্বাধীনতাটি যদি নিশ্চিত না থাকে, সমাজটি যদি চিন্তা ও বিবেকের জন্য খোলা প্রান্তর অবারিত করতে না পারে, সেই সমাজে স্বাধীন বা মুক্ত সাংবাদিকতা বিকশিত হতে পারে না। সাহসী ও বুদ্ধিবৃত্তিক সাংবাদিকতার ভিতও দৃঢ় হয় না বলে মন্তব্য করেন বিএফইউজের সভাপতি। গণমাধ্যমের স্বাধীনতার পাশাপাশি কাদের গণি চৌধুরী সাংবাদিকদের নৈতিকতা ও দায়িত্বশীলতার কথাও স্মরণ করিয়ে দেন। তিনি বলেন, ‘আজকাল প্রায়শই সংবাদমাধ্যম বা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার সঙ্গে দায়িত্বশীলতা ও নৈতিকতার বিষয়টি উচ্চারিত হয় জোরেসোরে। সংবাদ মাধ্যমের প্রথাগত দায়িত্বটি মানুষকে তথ্য জানানো, সেই তথ্য জানানোর মধ্য দিয়েই মানুষকে শিক্ষিত ও সচেতন করে তোলা, তথ্য এবং আলোচনার মাধ্যমে বিনোদন দেয়া এবং সময়ের প্রয়োজনে মানুষকে উদ্দীপ্ত করে তোলা। প্রকৃত পেশাদার সাংবাদিকতা কখনো‘অ-দায়িত্বশীল’হতে পারে না বলে মন্তব্য করে এই সাংবাদিক নেতা, ‘যারা দায়িত্বহীনভাবে সাংবাদিকতা পেশাকে ব্যবহার করেন, তারা আর যাই হোক সাংবাদিক নন।’‘আরেকটি বিষয়ে না বললেই নয়’- বলেন কাদের গণি চৌধুরী, ‘গণমাধ্যম বা সাংবাদিক কার প্রতি দায়বদ্ধ থাকবে, কার কাছে জবাবদিহি করবে? এই নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। সরকার চায় জবাবদিহি থাকুক তার কাছে, মালিক চায় তার কাছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সংবাদ মাধ্যমের দায়বদ্ধতা সমাজের প্রতি। সমাজের পাঠক বা দর্শকই তো তার ভোক্তা। তারাই মূল্যায়ন করবেন। তিনি বলেন, আবার রাষ্ট্রের অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতির গণমাধ্যমের দায়বোধ থাকা জরুরি। মনে রাখতে হবে, কোনো স্বাধীনতাই নিরঙ্কুশ নয়। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আর বিদ্বেষ ছড়ানো সমার্থক নয়। কোনো তথ্য যাচাই না করে তার ওপর ভিত্তি করে যুদ্ধ ঘোষণা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নয়। সমাজে ন্যায্যতার পক্ষে গণমাধ্যমকে থাকতে হবে।তবে সমাজকে শিক্ষিত করে তোলাও গণমাধ্যমের দায়িত্ব। শিক্ষিত সমাজই বুঝবে গণমাধ্যমের কাছে কতটা প্রত্যাশা করা সঙ্গত। তাই বলা হয়, শিক্ষিত সমাজে সাংবাদিকরা বেশি নিরাপদ।মনে রাখবেন, সততা ছাড়া কোনো গণমাধ্যম বহু মানুষের আস্থা অর্জন করতে পারে না। বৈশ্বিকভাবেই এখন সংবাদমাধ্যমের বড় সংকট ‘ফেক নিউজ’।
ফজর | ৫.২১ মিনিট ভোর |
---|---|
যোহর | ১.৩০ মিনিট দুপুর |
আছর | ৩.৪৭ মিনিট বিকাল |
মাগরিব | ৫.২৬ মিনিট সন্ধ্যা |
এশা | ৬.৪৪ মিনিট রাত |
জুম্মা | ১২.৩০ মিনিট দুপুর |