এম এ কবীর,ঝিনাইদহ:
ঝিনাইদহ জেলার সর্বত্র ব্যাঙের ছাতার মত গজিয়ে উঠেছে ডেন্টাল ক্লিনিক। যে যেমন করে পারছে ইচ্ছেমত সাইনবোর্ড লাগিয়ে মানুষের পকেট কাটছে। লুট করে নিচ্ছে রোগিদের সর্বম্ব। চিকিৎসার নামে এমন জঘণ্য কারবার চললেও দেখার কেউ নেই। এ যেন মগের মুল্লুক। স্বাস্থ্য বিভাগের কর্তারা নিজের আখের গোছাতে ব্যস্ত। ৫ আগষ্ট তাদের জন্য এনে দিয়েছে মহা সুখের কারবার। কোন কাগজের প্রয়োজন নেই। নেই কোন তদারকি। এই সুযোগে চিকিৎসা সেবাকে লুটপাটের আখড়া বানিয়ে নছিমন চালকও এখন দাঁতের ডাক্তার সেজে হাতিয়ে নিচ্ছেন সাধারণ মানুষের কষ্টের টাকা। এমনই একজন ডাক্তারের সন্ধান পাওয়া গেছে ঝিনাইদহ শহরের আরাপপুর বাস স্ট্যান্ডে ‘সবুজ টাওয়ার’ মার্কেটের ভেতরে। বড়সড় সাইনবোর্ডে লেখা আছে ‘বিসমিল্লাহ ডেন্টাল কেয়ার’। ‘মেডি প্লাস টুথপেস্ট’ কোম্পানীর সহায়তায় গড়ে তুলেছেন সাজানো গোছানো চেম্বার। আছে বেশ কিছু দামী যন্ত্রপাতি। আছে পেস্ট ব্যবহার সংক্রান্ত কোম্পানীর টুথপেস্টের সীল। এখানে আসলে যে কোন রোগিই আকৃষ্ট হবেন চিকিৎসা নিতে। নাম জিজ্ঞেস করতেই বললেন মোঃ রনি,পিতা মৃত আঃ রহিম, গ্রাম-বরিশখালী, হরিণাকুন্ডু, ঝিনাইদহ। লেখাপড়া কতদুর জানতে চাইলে প্রথমে বলেন আমি একজন টেকনোলজিষ্ট,পরে বললেন জে এস সি,তবে সার্টিফিকেট নেই। আগে কী করতেন? বললেন বাবা আরাপুর স্ট্যান্ডে নছিমন চালাতেন আমিও নছিমন চালাতাম। কিছুদিন ফ্যান-লাইট, চার্জারের দোকানে ছিলাম। পরে এক হাতুড়ে দাঁতের ডাক্তারের কাজে সহযোগিতা করতাম সেই থেকেই আমি দাঁতের চিকিৎসা করি। পৌর সভা থেকে একটি ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে এই ডেন্টাল ক্লিনিক চালু করেছি। অসংখ্য রোগীর সর্বনাশ করা এই দাঁতের ডাক্তার জানান এর জন্য কোন লেখা পড়া লাগে তা আমি জানতাম না। আমার মত অনেকেই এই ব্যবসা করে বাড়ি গাড়ি করেছে। আমি করলে দোষ কী। তিনি জানান বহুদিন এই ব্যবসা করে আসলেও সিভিল সার্জন কিংবা স্বাস্থ্য বিভাগের কেউ কোন দিন দেখতেও আসেনি। এদিকে সরকারি অনুমোদন ও কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে ঝিনাইদহে গড়ে উঠেছে বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। জেলা-উপজেলা সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আশপাশের এলাকায় গজিয়ে উঠেছে এসব হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। আর এসব বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বেতনভুক্ত দালালরা সরকারি হাসপাতালের রোগীদের ভাগিয়ে নিচ্ছে অনুমোদনহীন হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে। এসব প্রতিষ্ঠানে ঠিকমতো থাকছে না চিকিৎসক, নার্স ও অভিজ্ঞ সেবিকা। ফলে মাঝে মধ্যেই ঘটছে দুর্ঘটনা। ঝিনাইদহের স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে মানুষের মাঝে বাঁধ ভাঙ্গা ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র। এ নিয়ে মানুষ প্রকাশ্যে ও অপ্রাকাশ্যে প্রতিবাদ জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না। প্রতিবাদের ঝড় আছড়ে পড়ছে সামাজিক যোগোযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। সেখানে মানুষ বিভিন্ন্ ভাষায় স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের গালিগালাজ করছেন। স্বাস্থ্য বিভাগের এই বেহাল দশা নিরসনে ঝিনাইদহে কোনো ‘কান্ডারী’ নেই। জানা গেছে ঝিনাইদহ জেলায় প্রায় ১৮০টি বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক রয়েছে যার ৯৫% বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে সার্বক্ষণিক কোনো ডাক্তার নাই, এখানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কোনো নার্সও নেই, অধিকাংশ ক্লিনিক ও হাসপাতালের কোনো লাইসেন্স ও পরিবেশ অধিদপ্তরের সার্টিফিকেটও নেই। অথচ এখানে হাতে কলমে দেখে দেখে শেখা নার্স দিয়েই অবশকরা ও বিভিন্ন অপারেশন করা হয়ে থাকে। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ এই দুরবস্থার কথা জেনে বুঝেও নাকে তেল দিয়ে ঘুমিয়ে আছেন বছরের পর বছর। কারণ হিসাবে জানা যায়, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এইসব হাসপাতাল ও ক্লিনিক থেকে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা ঘুষ বাণিজ্য করে থাকেন। ক্লিনিক মালিকরা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই তারা ধরাকে সরা জ্ঞান করে ধুমছে চালিয়ে যাচ্ছেন কসাইখানা নামের ক্লিনিক ব্যবসা। এ বিষয়ে জানতে ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ কামরুজ্জামানের কাছে একাধীকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
কে এ-ই নসিমন চালক ভি আই পি ডাক্তার তার তথ্য সংগ্রহ চলছে আমাদের সাথে ই থাকুন। পর্ব -১
ফজর | ৫.২১ মিনিট ভোর |
---|---|
যোহর | ১.৩০ মিনিট দুপুর |
আছর | ৩.৪৭ মিনিট বিকাল |
মাগরিব | ৫.২৬ মিনিট সন্ধ্যা |
এশা | ৬.৪৪ মিনিট রাত |
জুম্মা | ১২.৩০ মিনিট দুপুর |