| বঙ্গাব্দ
ad728
ad728

কুষ্টিয়ার মাটির গর্ভে সোনার ফসল ওল কচু চাষে সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত"

রিপোর্টারের নামঃ MD MUNZURUL ISLAM
  • আপডেট টাইম : 16-06-2025 ইং
  • 26983 বার পঠিত
কুষ্টিয়ার মাটির গর্ভে সোনার ফসল ওল কচু চাষে সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত"
ছবির ক্যাপশন: কুষ্টিয়ার মাটির গর্ভে সোনার ফসল ওল কচু চাষে সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত"

একেএম নাজমুল আলম 

কুষ্টিয়া জেলার সদর উপজেলা কৃষি ভিত্তিক একটি জনপদ হিসেবে পরিচিত। ঐতিহ্যবাহী ধান-পাটের পাশাপাশি এখন নতুন সম্ভাবনার নাম "ওল কচু"। কৃষকদের হাতে হাতে ছড়িয়ে পড়ছে এই ফসলের চাষাবাদ। সাম্প্রতিক সময়ে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ব্যাপক হারে ওল কচু চাষ হচ্ছে, যা স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন এনে দিয়েছে। উপজেলার মনোহরদী, আসান নগর, হরিনারায়ণপুর ঝাউদিয়া বিভিন্ন ইউনিয়নে কৃষকরা পতিত ও অল্প উর্বর জমিতেও ওল কচুর চাষ করে সফল হয়েছেন। তুলনামূলকভাবে কম পরিচর্যায় এই ফসল ভালো ফলন দেয়। চারা রোপণের ৪-৫ মাস পরেই জমি থেকে তুলতে পারেন মোটা, সুস্বাদু ওল। কৃষকরা বলছেন, প্রতি বিঘা জমিতে ওল চাষে খরচ হয় গড়ে ১৮-২০ হাজার টাকা এবং ফলন হয় ৪০-৫০ মণ পর্যন্ত। বাজারে বর্তমানে প্রতি মণ ওল বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ১২০০ টাকায়। অর্থাৎ প্রতি বিঘায় গড়ে ৩০-৫০ হাজার টাকা লাভ করা সম্ভব। ঢাউদিয়া সদর  উপজেলার মাঝগ্রামের কৃষক রবিউল ইসলাম বলেন,গত বছর পরীক্ষামূলকভাবে এক বিঘা জমিতে ওল চাষ করি। ভালো ফলন দেখে এবার তিন বিঘা জমিতে চাষ করেছি। লাভ অনেক বেশি, ধানের তুলনায় ঝুঁকিও কম।"অন্যদিকে আমলার নারী কৃষক রোকেয়া বেগম বলেন,"আমরা আগে ধান চাষ করতাম, কিন্তু সার, পানি আর শ্রমের খরচে লাভ থাকতো না। এখন ওল চাষে কম খরচে বেশি লাভ হচ্ছওল কচু এখন শুধু কুষ্টিয়া নয়, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরে সরবরাহ হচ্ছে। কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী মহাসড়ক এবং স্থানীয় হাটবাজারগুলোতে ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়েছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, প্রতিদিন শত শত কেজি ওল এখান থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে।উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ওল কচুর  আধুনিক জাত এবং পরিচর্যা পদ্ধতি নিয়ে কৃষকদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। মাঠ পর্যায়ে কৃষি উপ-সহকারীরা কৃষকদের পাশে থেকে পরামর্শ দিচ্ছেন। কুষ্টিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, "মিরপুরে ওল কচু চাষে বিপ্লব ঘটেছে। আমাদের লক্ষ্য আরও বেশি কৃষককে এর আওতায় আনা, যাতে উৎপাদন বাড়ে ও কৃষক লাভবান হয়।"তবে কিছু সমস্যাও রয়ে গেছে। সংরক্ষণাগার (কোল্ড স্টোরেজ) না থাকায় ফসল দ্রুত বিক্রি করতে হয়। মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে কৃষকরা প্রায়ই ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হন। কৃষিঋণ পাওয়া অনেক ক্ষেত্রেই জটিল ও সময়সাপেক্ষ। তবুও, যদি সরকারি সহায়তা আরও জোরদার হয়, তাহলে কুষ্টিয়া খুব সহজেই "ওল কচুর হাব" হিসেবে পরিচিতি পেতে পারে। কৃষিনির্ভর বাংলাদেশে বিকল্প ফসল চাষের মাধ্যমে অর্থনৈতিক মুক্তির পথ দেখাচ্ছে কৃষকরা। ওল কচু এখন শুধু একটি সবজি নয়, এটি হয়ে উঠেছে সম্ভাবনার প্রতীক। কুষ্টিয়ার এই কৃষি বিপ্লব দেশের অন্য অঞ্চলের জন্যও হতে পারে অনুসরণীয় উদাহরণ।

ad728

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ad728
ad728
ফেসবুকে আমরা...
নামাজের সময়সূচী
জাতীয় সঙ্গীত
©সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃ আলোর পথ | আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ
সকল কারিগরী সহযোগিতায় অনুপম