| বঙ্গাব্দ
ad728
ad728

মালদ্বীপ-ভারতের চিড় ধরা সম্পর্ক কি নতুন বছরে জোড়া লাগবে

রিপোর্টারের নামঃ MD MUNZURUL ISLAM
  • আপডেট টাইম : 01-01-2025 ইং
  • 95267 বার পঠিত
মালদ্বীপ-ভারতের চিড় ধরা সম্পর্ক কি নতুন বছরে জোড়া লাগবে
ছবির ক্যাপশন: নরেন্দ্র মোদি ও মোহামেদ মুইজ্জু

ভাঙনের সুর বাজছিল অনেক দিন ধরেই। গত বছরের সেপ্টেম্বরে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ভাঙনের রেখা স্পষ্ট হয়ে যায়। মালদ্বীপে ভারতবিরোধী হাওয়া ব্যাপকভাবে বইতে শুরু করে। চীন–ভারতের শক্তিমত্তার খেলায় মালদ্বীপ কোন দিকে ঝুঁকবে, দেশটির জনগণ ভোট দিয়ে তা নির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত নেয়। প্রবল ভারতবিরোধিতা ও ‘ইন্ডিয়া আউট’ আন্দোলনের মাধ্যমে ২০২৩ সালের নভেম্বরে নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন মোহাম্মদ মুইজ্জু। এর আগে থেকেই ভারতবিরোধিতার হাওয়া বুঝে বেইজিং হাত বাড়িয়েই ছিল। দেশটির নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু বেইজিংয়ের বাড়ানো সে হাত ধরে নিতে দ্বিধা করেননি।

গত বছরের ওই নির্বাচনে ভারতপন্থী নেতা মোহাম্মদ সলিহ জয়ী হলে দ্বীপদেশটিতে নয়াদিল্লির প্রভাব বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছিল। তবে চীনপন্থী হিসেবে পরিচিত মোহাম্মদ মুইজ্জু প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় পাশার দান উল্টে যায়। যার ফল দেখা শুরু হয় ২০২৪ সালের শুরু থেকেই। অবশ্য বছরের মাঝামাঝি থেকে আবার চিত্র বদলাতে থাকে।মালদ্বীপকে ভূরাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে দক্ষিণ এশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ দেশ হিসেবে মনে করা হয়। ভারত মহাসাগরের মাঝখানে একটি কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে আছে মালদ্বীপ। প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্য দিয়ে যে জাহাজ চলাচলের রুট বা শিপিং লাইনগুলো আছে, তার মাঝামাঝি কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে দ্বীপরাষ্ট্রটি। তাই দেশটিতে নিজেদের উপস্থিতি বাড়াতে ভারত ও চীন প্রবল চেষ্টা চালিয়ে আসছে।

মুইজ্জু চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড অবকাঠামো কর্মসূচি থেকে বড় ধরনের আর্থিক সুবিধা নিতে আগ্রহী। দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট আবদুল্লা ইয়ামিনও ছিলেন চীনঘেঁষা। তিনি মালদ্বীপে নির্মাণ প্রকল্পের জন্য ভারতকে প্রত্যাখ্যান করে চীনের কাছ থেকে প্রচুর ঋণ নিয়েছিলেন। ২০১৮ সালে ইয়ামিনকে হটিয়ে ক্ষমতায় আসেন ৬১ বছর বয়সী সলিহ।

অভিযোগ রয়েছে, ইয়ামিন দেশটিকে চীনা ঋণের ফাঁদে ঠেলে দিয়েছিলেন। ইয়ামিনের চীনঘেঁষা নীতি নয়াদিল্লিকে শঙ্কিত করে তুলেছিল। ভারত মহাসাগরে চীনের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদেশগুলোর কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল ভারত। ভারত কৌশলগত জোট কোয়াডের সদস্য। চার সদস্যের এই জোটের অন্য তিন সদস্যদেশ হলো যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও জাপান। ভারতের অতিমাত্রায় রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব দ্বীপরাষ্ট্রটির বেশির ভাগ মানুষ পছন্দ করেন না। অথচ সলিহর আমলে সেই প্রভাব অনেকটা বেড়ে যায়। তাই সলিহর বদলে মুইজ্জুকেই বেছে নেয় মালদ্বীপবাসী।

মুইজ্জু অবশ্য কূটনৈতিক দিক থেকে ভারসাম্য রেখে এগোতে চাইছেন। শুরুতে প্রবল ভারতবিরোধিতা দেখালেও পরে অবস্থান বদলেছেন তিনি। মালদ্বীপের উন্নতিতে মুইজ্জু চীনকে পাশে চান। পাশাপাশি ভারতবিরোধী জনমতকেও তিনি চটাতে চান না। কিন্তু ভারতবিরোধিতাকে কাজে লাগিয়ে নির্বাচনে জিতেছেন বলে লক্ষ্য স্থির রাখতে চান। তাই, মুইজ্জু এমন কৌশলে এগোতে চাইছেন, যাতে কূটনৈতিক দিক থেকে তাঁর দেশ লাভবান হয়।২০২৪ সাল জুড়ে ভারত ও মালদ্বীপের সম্পর্কের নানা চড়াই–উতরাই দেখা গেছে। বছরের শুরুতে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কে বাড়তে থাকা চিড় বছরের শেষের দিকে এসে আবার জোড়া লাগার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। বছরের শুরুতে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু ‘ইন্ডিয়া আউট’ প্রচার শুরু করেছিলেন এবং মালদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনা সরিয়ে নিতে জোর দেখিয়েছিলেন। তবে বছরের শেষের দিকে এসে কূটনৈতিক সম্পর্ক ঠিকঠাক করার দিকে আবার মনোযোগ দেন তিনি। ভারতের প্রভাব কমিয়ে চীনের দিকে ঝুঁকে পড়ার যে নীতি শুরুতে তিনি দেখিয়েছিলেন, তা থেকে সরে আসেন তিনি।


ad728

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ad728
ad728
ফেসবুকে আমরা...
নামাজের সময়সূচী
জাতীয় সঙ্গীত
©সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃ আলোর পথ | আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ
সকল কারিগরী সহযোগিতায় অনুপম