জনজীবনের সংকট দূর করতে মনোযোগ দেওয়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সিপিবির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। তিনি বলেছেন, সব কাজ করার দায়িত্ব এই সরকারের নয়। বরং নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করাই সরকারের অন্যতম দায়িত্ব।
সেলিম বলেছেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি এই সরকারের অনেকেই ছবি নামাতে, বিশেষ ঘোষণায় তৈরিতে যত ব্যস্ত, জনজীবনের সংকট সমাধানে তারা ততটা ব্যস্ত নয়।’ রাজধানীর পল্টন ময়দানে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সমাবেশে বোমা হামলার ২৪তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক শ্রদ্ধা নিবেদন ও সমাবেশে সেলিম এসব কথা বলেছেন। আজ সোমবার সকাল ৯টায় পল্টনে অবস্থিত সিপিবির কেন্দ্রীয় কার্যালয় মুক্তি ভবনের সামনে বোমা হামলায় শহীদদের স্মরণে নির্মিত অস্থায়ী বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে সমাবেশ শুরু হয়। সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়েছে। ২০০১ সালের ২০ জানুয়ারি সিপিবির সমাবেশে বোমা হামলায় পাঁচজন নিহত হয়েছিলেন। হামলায় খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা উপজেলার সিপিবি নেতা হিমাংশু মণ্ডল, সিপিবির খুলনা জেলার রূপসা উপজেলার নেতা ও দাদা ম্যাচ ফ্যাক্টরির শ্রমিকনেতা আবদুল মজিদ, ঢাকার ডেমরা থানার লতিফ বাওয়ানি জুট মিলের শ্রমিকনেতা আবুল হাসেম এবং মাদারীপুরের মোক্তার হোসেন ঘটনাস্থলেই নিহত হন। খুলনা বিএল কলেজের ছাত্র ইউনিয়নের নেতা বিপ্রদাস রায় আহত হয়ে ঢাকা বক্ষব্যাধি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই বছরের ২ ফেব্রুয়ারি মারা যান। বোমা হামলায় শতাধিক ব্যক্তি আহত হন। ওই হামলার প্রসঙ্গ তুলে ধরে মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ২০০১ সালে সারা দেশ থেকে বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ ঢাকায় সমবেত হয়েছিল তাদের কথা তুলে ধরার জন্য। বোমা হামলা চালিয়ে তাদের কণ্ঠকে স্তব্ধ করার চেষ্টা করা হয়েছিল। ঘটনার পরপর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতেও বোমা বিস্ফোরণের খবর বেরিয়েছিল। ওই সময় পত্রপত্রিকায় হত্যাকারীদের নিয়ে নানা খবর প্রকাশিত হয়েছিল। সরকার এই হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে নানা ধরনের কথাবার্তা সামনে আনার চেষ্টা করে। এই হত্যাকাণ্ডের পূর্ণাঙ্গ বিচার না হওয়ায় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে অবিলম্বে হত্যাকারীদের চিহ্নিত, গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানান।সমাবেশে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘এ দেশে দ্বিদলীয় রাজনৈতিক ধারার বিপরীতে গণমানুষের স্বার্থ রক্ষায় নীতিনিষ্ঠ বাম গণতান্ত্রিক বিকল্প শক্তি সমাবেশ গড়ে তোলায় পদে পদে বাধা আসছে। এখনো এই অপচেষ্টা চলছে। ২০০১ সালে ২০ জানুয়ারি এভাবে সিপিবির ডাকে লাখো মানুষের সমাবেশে বোমা হামলা চালানো হয়। লাল পতাকার হাজার হাজার মানুষের উত্থান ঠেকাতে সাম্প্রদায়িক, অগণতান্ত্রিক, লুটেরা শাসকগোষ্ঠী এই হামলা চালিয়েছে। আজও এর সঙ্গে জড়িত ও নেপথ্যের হোতাদের গ্রেপ্তার ও বিচার শুরু করা হয়নি।’ তিনি ২০২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানের পর গণতন্ত্র সুপ্রতিষ্ঠা ও বৈষম্যমুক্ত সমাজ গড়ার সংগ্রাম অগ্রসর করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু এ সুযোগ কাজে লাগানো যাচ্ছে না। কারণ, অন্তর্বর্তী সরকার জনজীবনের সংকট দূর করতে পারছে না। আগের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা বহাল রেখেই আরও ভ্যাট-ট্যাক্স চাপিয়ে দিয়ে মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলছে।’ তিনি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার এবং নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণার আহ্বান জানান।
ফজর | ৫.২১ মিনিট ভোর |
---|---|
যোহর | ১.৩০ মিনিট দুপুর |
আছর | ৩.৪৭ মিনিট বিকাল |
মাগরিব | ৫.২৬ মিনিট সন্ধ্যা |
এশা | ৬.৪৪ মিনিট রাত |
জুম্মা | ১২.৩০ মিনিট দুপুর |